১ জুলাই ১৯৬৭
১জুলাই ২০২০
শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ। তেপ্পান্ন বছর পেরিয়ে চুয়ান্ন তে পা রাখলো আমাদের প্রিয় এই প্রতিষ্ঠানটি। বহু বাঁধা বিঘ্ন পেরিয়ে আজকের এই অবস্হানে এসে পৌঁছেছে সে।
১৯৭১ সালের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণে মুক্তাগাছা অঞ্চলের প্রথম দীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৭২ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে সকল শহীদ স্মরণে তৎকালীন মুক্তাগাছা কলেজ শহীদ স্মৃতি কলেজ নাম ধারণ করে। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়।
বেসরকারি আমলের কোন তথ্যই কলেজে নেই। নেই শিক্ষকদের তালিকাও। লাইব্রেরিতে সেই সময়ের কোন তথ্য নেই। কলেজ স্মরণিকা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দাওয়াত পত্র, অনুষ্ঠান সূচি, পুরানো মানচিত্র, পুরানো রেজুলেশন কিছুই নেই। আমি ১৯৮২ সালে এই কলেজে একাদশ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। দুই বছরে ৪৫টি দেওয়াল পত্রিকা বের করেছিলাম রংধনু নামে। ইংরেজি বিভাগের তৎকালীন প্রভাষক বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আমার প্রিয় শিক্ষক জহুরুল ইসলাম স্যার রংধনুর উপদেষ্টা এবং ডিজাইনার ছিলেন। সরকারিকরণের পর কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ প্রফেসর আতাহার আলী দেওয়ান স্যার রংধনুর প্রত্যেক সংখ্যায় শুভেচ্ছা বাণী দিতেন।সেই রংধনু গুলো লাইব্রেরিতে জমা দিয়ে গিয়েছিলাম ১৯৮৪ সালে। সেসবের নাম নিশানাও নেই। মঞ্চস্হ নাটকের মুদ্রিত পরিচিতি জমা দিয়েছিলাম সেইসব এখন স্মৃতি কোষেই সংরক্ষিত কেবল।
চমৎকার প্রাণ স্পন্দনে ভরপুর ছিল সেই সময়।
আমি ৩০ তম অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছি নয় মাস আগে। নয় মাস ধরে যুদ্ধ করছি কলেজের সার্বিক পথ পরিক্রমা পরিবর্তন করতে। যে বাসনা নিয়ে এসেছিলাম সেটি মরতে বসেছিল। সিইডিপি প্রজেক্ট আমাকে শুধু বাঁচিয়েই দিল না, উচ্চতর লিডারশীপ ট্রেনিং এ পাঠালো মালয়েশিয়ার নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে না গেলে কলেজ এডুকেশন এর সীমাবদ্ধতাগুলো এবং উত্তরণের পথ কখনোই জানা হতো না আমার।
বলতে কষ্ট হলেও বলতে হবে শিক্ষা সূচকের কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছেনি কলেজটি। কেন পৌঁছেনি সেটি নিয়ে না ভেবে আমি সমুখ পানে ছুটছি।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এম পি মহোদয় শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজকে বুকে টেনে নিয়েছেন।
কলেজের ইতিহাসে এই প্রথম একটি নান্দনিক একাডেমিক ভবন হচ্ছে তাঁর আন্তরিকতায়।
আজ কলেজ চুয়ান্ন বছরে পদার্পণ করলো।
দেশ বিদেশে অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে আছেন। এই কলেজ সেইসব শিক্ষার্থীদের মাতৃস্নেেহে লালন করে পৃথিবীর সেবায় উৎসর্গ করেছে।
এই শুভ দিনে আমি সকল পর্যায়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী, সুধীজন, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সংশ্লিষ্টদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়কে শুভেচ্ছা জানাই। শিক্ষা বান্ধব জননন্দিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের শিক্ষা বিভাগের সার্বক্ষণিক প্রেরণা বিন্দুর আলোকধারা। তাঁকে সশ্রদ্ধ অভিনন্দন।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোণিত ধারা এই জাতির মধ্যে প্রবহমান।
তাঁকে হাজার সালাম।